1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

মৌলভীবাজার ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের মে দিবস পালন

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১ মে, ২০২৩
  • ৯৯ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার : মহান মে দিবসের ঐতিহাসিক শিক্ষাকে সামনে রেখে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করার দৃপ্ত শপথ আর অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখা আন্তজাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস “মহান মে দিবস” পালন করে। ১ মে সোমবার সকাল ১১ টায় মৌলভীবাজার পৌর মিলনায়তনে জমায়েত হয়ে লাল পতাকা ও বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন সহকারে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে পৌর মিলনায়তনে মহান মে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিক। ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাসের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ধ্রæবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশ সুমন, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ চট্টঃ ২৪৫৩ এর সভাপতি মোঃ সোহেল মিয়া, চা-শ্রমিক সংঘের জেলা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক হরিনারায়ন হাজরা, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘ রেজিঃ নং চট্টঃ ২৮৬৪ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ মতিউর রহমান, কমলগঞ্জ উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘ রেজিঃ নং মৌলঃ৩২ এর সভাপতি মোস্তাক মিয়া, মৌলভীবাজার হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ খোকন, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, হোটেল শ্রমিকনেতা মোঃ শাহিন মিয়া, রিকশা শ্রমিকনেতা মোঃ জসিমউদ্দিন প্রমূখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন ১৮৮৬ সালে রক্তঝরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণি সামাজিক স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী ৮ ঘন্টা শ্রম, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম ও ৮ ঘন্টা বিনোদনের দাবি প্রতিষ্ঠিত করে। ৮ ঘন্টা শ্রম দিবস এবং মহান মে দিবসে ছুটি কারো দান নয় বরং শ্রমিক শ্রেণির রক্তস্নাত পথে অর্জিত অধিকার। বক্তারা শ্রমিক শ্রেণির মহান শিক্ষা গুরু কমরেড এঙ্গেলেসের বক্তব্য উদৃত করে বলেন ‘মে দিবসের সংগ্রাম শুধু মাত্র ৮ ঘন্টা শ্রম দিবসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, মে দিবসের সংগ্রাম শ্রমিক শ্রেণির মজুরি দাসত্ব ব্যবস্থার উচ্ছেদের অবিচ্ছেদ্য সংগ্রাম।’ তাই আজকে প্রতিক্রিয়াশীল মহলসহ বিভিন্ন মহলের উদ্দেশ্যমূলকভাবে মে দিবস পালনের বিপরীতে শ্রমিকশ্রেণিকে মে দিবসের বিপ্লবী চেনতাকে ধারণ করে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।
আলোচনা সভায় বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন চাল-ডাল, তেল-লবন-চিনি, মাছ-মাংস, ডিম-দুধ, শাক-সবজিসহ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি-মূল্যস্ফীতির এই সময়ে বাচাঁর মত মজুরি না পেয়ে অর্ধাহার-অনাহার ক্লিষ্ট শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি জনগণের জীবন চলাই দায় হয়ে পড়েছে। জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আয় বাড়েনি। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বসংস্থা আইএমএফের শর্তে ঋণ নিয়ে সরকার একদিকে দেশকে ঋণগ্রস্থ করে দেউলিয়াত্বে ঝুঁকিতে ফেলছে, অন্যদিক গ্যাস-বিদ্যুত-জ্বালানি ও সার থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহার করে ‘মূল্য সমন্বয়ের’ নামে ক্রমাগত মূল্য বাড়িয়ে চলেছে। জাতীয় ও জনজীবনের সমস্যা-সংকটের জন্য দায়ী মালিক শ্রেণি, শাসক-শোষকগোষ্ঠি সর্বোপরি তাদের প্রভ‚ সাম্রাজ্যবাদকে আড়াল করা হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী একচেটিয়া পুঁজি এবং তার সাথে সমন্বিত দেশীয় দালাল পুঁজির নির্মম শোষণ-লুন্ঠন এবং তাদের স্বার্থরক্ষাকারী ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী সরকারের অত্যাচার-নিপীড়ন ও স্বৈরশাসনে দেশের শ্রমিক-কৃষক-জনগণ আজ অতিষ্ঠ। সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের এদেশীয় দালাল শাসক-শোষক গোষ্টি তাদের স্বার্থ হাসিলে শ্রমিক অঙ্গনে দালাল নেতৃত্ব ও ট্রেড ইউনিয়ন, দালাল শ্রমিক জোট, সুবিধাবাদী-সংশোধনবাদীদের ব্যবহার করছে। এর পাশাপাশি শ্রমিকরা যাতে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলতে না পারে সেজন্য শ্রমআইন ও শ্রমবিধি সংশোধনের নামে শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার হরণ, সংগঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ইত্যাদি পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। সম্প্রতি অত্যাবশকীয় পরিষেবা বিল উত্থাপন রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ রেখে শ্রমিকদের ধর্মঘট করার অধিকার হরণ করা হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদের আশীবার্দ নিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায় করার লক্ষ্যে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কঠোর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। অন্যদিকে জনজীবনের সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে নিছক নির্বাচন কেন্দ্রিক আন্দোলনের নামে প্রতিক্রিয়াশীল বিরোধী দালাল রাজনৈতিক দলগুলো প্রভ‚ সাম্রাজ্যবাদের আর্শীবাদ নিয়ে ক্ষমতায় যেতে যেমন মরিয়া, তেমনি বামনামধারী সংশোধনবাদী-সুবিধাবাদীরাও ক্ষমতার উচ্ছিষ্ঠ লাভের আশায় ছোটাছুটি করছে। ।
সভায় বক্তারা আরও বলেন সমগ্র পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা এক গভীর ও সামগ্রিক সংকট, দ্ব›দ্ব-সংঘাতময় এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ, মুদ্রাযুদ্ধ, আঞ্চলিক ও স্থানিক যুদ্ধের প্রক্রিয়ায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে। আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্ব›দ্ব তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে বিশ্বযুদ্ধের সম্ভবনা মূর্ত হয়ে উঠেছে। সাম্রাজ্যবাদীরা জোরদার করছে সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতিকে। তাদের এই যুদ্ধ প্রস্তুতি থেকে আমাদের দেশও মুক্ত নয়। ভ‚-রাজনৈতিক ও রণনীতিগত গুরুত্বের প্রেক্ষিতে ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশকে নিয়েও আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্ব›দ্ব সুতীব্র। বক্তারা বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ উন্মদনার বিরুদ্ধে বিশ্ব শ্রমিকশ্রেণি ও জনগণের ন্যায় সঙ্গত সংগ্রাম বেগবান করার আহবান জানান।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..